পাবনার কাজিরহাট-আরিচাঘাট নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় দু’পাড়ে আটকা পড়েছে ৪ শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক। এতে প্রায় তিন কিলোমিটার জুড়ে দীর্ঘ যানবাহনের সারি তৈরি হয়েছে।
এছাড়া পল্টুনটি স্থাপন না হওয়ায় বিকল্প কোন পল্টুন না থাকার কারণে ঘাটে ভিড়তে না পেরে আরিচা থেকে যানবাহন নিয়ে আসা একটি ফেরি নদীতে নোঙর করে আছে। এর ফলে এই ফেরিঘাটে পারাপারের জন্য আসা যানবাহনের শ্রমিক ও যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আরিচা ঘাট থেকে নতুন পন্টুন নিয়ে আসা হয় এবং সেটি স্থাপন শুরু করেছে। একইসঙ্গে ভেঙে যাওয়া পুরাতন পল্টুন এখান থেকে মেরামত করার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আরিচাঘাটে।
বিষয়টি কাজিরহাট ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মাহবুবুর রহমান নিশ্চিত করে সংবাদ প্রকাশকে জানান, আমাদের এখানে তিনটি ফেরি থাকলেও পল্টুন এখন মাত্র একটি থাকায় সেটি ভেঙে গেলে আরেকটি পল্টুন না আসা পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়। এতে ঘাটে কোনো ফেরি ভিড়তে না পারায় বন্ধ ছিল ফেরি চলাচল। তবে সন্ধ্যার দিকে পল্টুন স্থাপন করা হয়েছে। অন্য পুরাতন পল্টুনটি আরিচাঘাটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।”
এদিকে সরেজমিনে গেলে যাত্রী ও যানবাহনের চালকরা অভিযোগ করে জানান, কাজিরহাট-আরিচা নৌপথে ছয় থেকে সাতটি ফেরির প্রয়োজন। কিন্তু চালু রয়েছে ছোট ছোট তিনটি ফেরি। যে তিনটি চালু রয়েছে সেগুলো একদিকে যেমন ছোট ও ধীরগতির, তেমনি আবার ত্রুটিযুক্ত। ফলে কাজিরহাট ফেরিঘাটে আরিচায় পার হতে আসা যানবাহনের ভিড় লেগেই থাকে।
এছাড়া পর্যাপ্ত পল্টুন না থাকায় ফেরি বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না বলেও জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি এই ঘাটে কমপক্ষে ৩/৪ টি পল্টুন স্থাপন করা দরকার। কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি বারবার জানানো হলেও এখানে পল্টুন বাড়ানো হচ্ছে না বলে জানান তারা। যার জন্য ঘাটে দীর্ঘ যানজট থাকলেও কিছু করার নেই ঘাট কর্তৃতপক্ষের।
এ সময় কয়েকজন ট্রাক চালক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “মহাসড়কে চার-পাঁচ দিন ধরে এভাবে বসে থাকায় খাওয়ার কষ্টের সঙ্গে টয়লেটের সমস্যা দেখা দিয়েছে। অথচ ঘাটের সুপরিসর ট্রাক টার্মিনালে থাকলে মহাসড়ক যেমন যানজটমুক্ত থাকতো তেমনি ট্রাক শ্রমিকদেরও থাকা, খাওয়া ও টয়লেট নিয়ে সমস্যা হতো না।”
লালমনিরহাট থেকে আগত ট্রাকচালক জুয়েল রানা জানান, এত বড় একটি ফেরিঘাটে মাত্র একটি পন্টুন থাকায় মাঝেমধ্যেই ভেঙে যাওয়ার খবর শুনতে পাই। এতে আমাদের চরম ভোগান্তির মধ্যে থাকতে হয়। এখানে কমপক্ষে ৩টি পন্টুন দরকার।”
এ বিষয়ে সড়ক বিভাগের পাবনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম শামসুজ্জোহা বলেন, “কাজিরহাটের ট্রাক টার্মিনাল দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথাও বলেছি। টার্মিনালটি দখলমুক্ত হলে ঘাট-সংলগ্ন মহাসড়ক অনেকটাই যানজট মুক্ত হবে।”
বিআইডব্লিউটিসির কাজিরহাট ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, “আরিচা থেকে নতুন পন্টুন এসে ভেঙে যাওয়া পন্টুনটি সরিয়ে ওই স্থানে নতুন পন্টুন বসানো হয়েছে। আশা করছি রাত থেকে ঘাটে যানবাহন চলাচল শুরু হবে।”